বিবাহ হলো ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যাকে অর্ধেক দ্বীনও বলা হয়। বর্তমান আমাদের মুসলিম সমাজে বিয়ের ক্ষেত্রে বেধর্মীদের অনুসরন অনেক পরিমাণ বেড়ে গেছে। গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান, ডিজে বাজানো, বিয়ে উপলক্ষ্যে নন মাহরামদের সাথে অবাধ মেলামেশা, কনে পক্ষকে অধিক চাপ প্রয়োগ করা বরপক্ষকে ভোজনের জন্য, যৌতুক দিতে বাধ্য করাসহ ইত্যাদি অনৈসলামিক কর্মকান্ড। উল্লেখিত অনৈসলামিক কার্যবলির মধ্যে ঘৃণিত একটা প্রথা হলো যৌতুক। যেটা দেওয়া-নেওয়া উভয়টায় হারাম। বর্তমান আমাদের দেশের অনেক এলাকায় এই ঘৃণিত প্রথাটি ব্যাপকভাবে চলমান। এমনকি মেয়ের পিতাকে এমনভাবে বাধ্য করা হয় যে, তিনি যৌতুক দিতে না পারলে তার মেয়েকে বিবাহ করবেন না ছেলে। অবশেষে অনেক পিতা নিরুপায় হয়ে ধার-দেনা করে হলেও নিজের মেয়ের সুখের কথা ভেবে যৌতুক দিয়ে জামাইয়ের হাতে তুলে দেন কলিজার টুকরা মেয়েটিকে।
প্রিয় ভাই!
আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি যৌতুক দাবি করাটা কি! যৌতুক না হলে বিয়ে করব না এ জাতীয় কথাবার্তাগুলি আমরা বলি।
অথচ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে বলেন:
ِ
“তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।” [সূরা বাকারা:১৮৮]
যৌতুক গ্রহণ করা অন্যায়ভাবে অর্থ গ্রাস করার শামিল। সুতরাং তা হারাম।
আজ আমাদের যেটা পালন করার কথা সেটা আমরা পালন করছি না। আমাদের জন্য যৌতুক দাবি করাটা হারাম কিন্তু আমরা তা দাবি করছি। অথচ মোহরানা আদায় করাটা আমাদের জন্য আবশ্যক কিন্তু সেটাকে আমরা ঠিকমত আদায় করি না।
ইসলামী শরীয়তে যৌতুকের আদৌ কোন স্থান নেই,অথচ
ইসলামে বিবাহ বন্ধনে মোহরানার গুরুত্ব অত্যাধিক। মোহর প্রদান স্বামীর অন্যতম প্রধান দায়িত্ব এবং স্ত্রীর মৌলিক অধিকার।
মোহরানা প্রদান বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’আলা সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন:
“আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের দেনমোহর খুশী মনে প্রদান করবে।” [সূরা নিসা:৪]
তবে আরেকটা বিষয় আমাদের সমাজে অহরহ দেখা যায় তা হলো ছেলেদের প্রতি মোহরানা বৃদ্ধির জন্য চাপাচাপি করা হয়। যেটা খুবই খারাপ একটা বিষয়। অনেকে এই চিন্তা করে মোহরানা বৃদ্ধি করে দেন যাতে ছেলে, মেয়েকে দ্রুত তালাক প্রদান করতে না পারে। আমরা আজ এতটা নিঁচুতে নেমেছি যে,বিবাহ বন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পূর্বেই বিচ্ছেদের চিন্তা করে থাকি।
তাই আসুন! নবির সুন্নাহ মেনে বিবাহ করি।
যৌতুক নামক ভিক্ষাকে পরিহার করি।
লেখক : মুহা: আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঝিনাইদহ।